সুসংক্ষিপ্ত ও সুসমৃদ্ধ বাণী

বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।

“আম্মা বা‘দ,

  • নিশ্চয়ই সবচেয়ে সত্য কথা হলো আল্লাহর কিতাব (পবিত্র কুরআন)।
  • মানুষের জীবনে সবচেয়ে মজবুত বন্ধন হলো তাকওয়ার কথা (আল্লাহভীতি ও আনুগত্য)।
  • সর্বোত্তম ধর্মীয় আদর্শ হলো ইব্রাহীম (আঃ)-এর ধর্মীয় আদর্শ (তাওহীদ এবং আল্লাহর একত্বের প্রতি অটল থাকা)।
  • সর্বোত্তম জীবনপদ্ধতি হলো মুহাম্মদ (সঃ)-এর সুন্নাহ (তাঁর আদর্শ ও পথ অনুসরণ করা)।
  • আল্লাহর স্মরণ হলো সবচেয়ে সম্মানিত কথা।
  • কুরআন হলো সর্বোত্তম কাহিনী (মানুষের জন্য সেরা পাঠ)।
  • উত্তম কাজ হলো সেই কাজ, যা দৃঢ় সংকল্পের সাথে করা হয়।
  • নিকৃষ্টতম বিষয় হলো বিদ‘আত (ধর্মে নতুন উদ্ভাবন বা পরিবর্তন)।
  • নবীদের পথনির্দেশ হলো সর্বোত্তম পথনির্দেশ।
  • শহীদের মৃত্যু হলো সবচেয়ে মহিমান্বিত মৃত্যু।
  • সবচেয়ে বিপর্যয়কর অন্ধত্ব হলো হিদায়াত পাওয়ার পরে পথভ্রষ্ট হওয়া (সঠিক পথ থেকে বিপথগামী হওয়া)।
  • যে জ্ঞান মানুষের কল্যাণে আসে, সেটিই সর্বোত্তম জ্ঞান।
  • আর যা পথনির্দেশনা হিসেবে অনুসরণ করা হয়, সেটিই উত্তম পথনির্দেশ।
  • অন্তরের অন্ধত্ব হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট অন্ধত্ব।
  • দানশীলতার হাত (উপরের হাত) গ্রহণ করার হাতের (নিচের হাত) চেয়ে উত্তম।
  • যা কম কিন্তু পর্যাপ্ত, তা অধিক এবং বিভ্রান্তিকর সম্পদ থেকে উত্তম (এমন সচ্ছলতা ও পরিপূর্ণতা, যাতে মানুষের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়)।
  • মৃত্যুকালে অজুহাত হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট অজুহাত।
  • আর কিয়ামতের দিনের অনুতাপ হলো সবচেয়ে ভয়াবহ অনুতাপ।
  • মানুষের মধ্যে এমন কেউ আছেন যারা সালাত আদায় করেন দেরিতে (যথাসময়ে নয়)।
  • কেউ কেউ আছেন যারা আল্লাহকে স্মরণ করেন ভুল পদ্ধতিতে।
  • সবচেয়ে বড় পাপ হলো মিথ্যা বলা।
  • আত্মার তৃপ্তি হলো সবচেয়ে বড় সম্পদ।
  • তাকওয়া (আল্লাহভীতি ও আনুগত্য) হলো সর্বোত্তম পাথেয়।
  • আল্লাহর ভয় হলো জ্ঞানের চূড়ান্ত শিখর।
  • অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস হলো সর্বোত্তম বিষয়।
  • সন্দেহ করা কুফরির একটি শাখা (ঈমানের অভাবের লক্ষণ)।
  • বিলাপ করা জাহেলিয়াতের (অজ্ঞতার যুগের) কাজ।
  • (কারো সম্পদ) আত্মসাৎ করা হলো জাহান্নামের অঙ্গার (সঞ্চয় করার নামান্তর)।
  • জমা করা অবৈধ সম্পদ আগুনে (ছ্যাকা দেওয়ার লোহায়) পরিণত হবে।
  • কবিতা (যা আল্লাহর স্মরণ থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখে) শয়তানের মন্ত্র।
  • মদ হলো সব পাপের মূল (যার মাধ্যমে অন্যান্য পাপ সংঘটিত হয়)।
  • নারী হলো শয়তানের ফাঁদ (শয়তান নারীদের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টি করে)।
  • যৌবন হলো পাগলামির একটি অংশ (এটি অনুশাসনহীন অস্থিরতার দিকে নিয়ে যায়)।
  • সুদ হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট উপার্জন।
  • এতিমের সম্পদ ভোগ করা হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট আহার।
  • সেই ব্যক্তি সত্যিকারের সুখী, যে অন্যের ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে।
  • দুর্ভাগা সেই ব্যক্তি, যে মাতৃগর্ভেই দুর্ভাগা (হিসেবে নির্দিষ্ট) হয়ে যায়।
  • অবশেষে, তোমাদের প্রত্যেককে কবরের চার হাত ভূমির দিকে যেতে হবে।
  • প্রতিটি বিষয়ে তার শেষাংশই আসল।
  • আমলের মূল্য নির্ধারিত হয় তার সমাপ্তির উপর।
  • সবচেয়ে নিকৃষ্ট বর্ণনা হলো মিথ্যার বর্ণনা।
  • যা আসন্ন, তা নিকটবর্তী।
  • মুমিনকে গালি দেওয়া হলো ফিসক (পাপ), আর মুমিনকে হত্যা করা হলো কুফরি (অবিশ্বাস)।
  • মুমিনের গীবত করা (পেছনে নিন্দা করা) হলো আল্লাহর নাফরমানি।
  • মুমিনের সম্পদের সম্মান তার রক্তের সম্মানের মতো।
  • যে আল্লাহর নামে মিথ্যা শপথ করে, আল্লাহ তাকে মিথ্যাবাদী প্রমাণিত করবেন।
  • যে ক্ষমা করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন।
  • যে দয়া করে, আল্লাহ তার প্রতি দয়া করবেন।
  • যে রাগ দমন করে, আল্লাহ তাকে পুরস্কৃত করবেন।
  • যে বিপদে ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে প্রতিদান দেবেন।
  • যে লোক খ্যাতির পেছনে ছোটে, আল্লাহ তাকে অপমানিত করবেন।
  • যে ধৈর্যশীল হয়, আল্লাহ তার জন্য প্রতিদান বহুগুণে বাড়িয়ে দেবেন।
  • যে আল্লাহর অবাধ্যতা করে, আল্লাহ তাকে শাস্তি দেন।

শেষে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তিনবার বলেন:

‘হে আল্লাহ! আমাকে এবং আমার উম্মতকে ক্ষমা করুন।

হে আল্লাহ! আমাকে এবং আমার উম্মতকে ক্ষমা করুন।

হে আল্লাহ! আমাকে এবং আমার উম্মতকে ক্ষমা করুন।’

আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি আমার এবং তোমাদের জন্য।”

(হাদীস সমাপ্ত)

উপসংহার: ইসলামের শিক্ষা কেবল একটি ধর্মীয় গাইডলাইন নয়, বরং এটি মানব জীবনের সর্বোত্তম পথনির্দেশ। পবিত্র কুরআন এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর হাদীস আমাদের জীবন পরিচালনার জন্য এক অতুলনীয় দিশারি। এই হাদীসটি মানব জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক, যেমন আল্লাহভীতি (তাকওয়া), সত্যবাদিতা, সুন্নাহর অনুসরণ, বিদআতের ক্ষতিকর দিক, ধৈর্য এবং দানশীলতার গুরুত্বকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। এতে ইহকাল ও পরকালের প্রস্তুতির জন্য যে গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে, তা প্রতিটি মুমিনের জন্য চিন্তার খোরাক। এটি শুধু উপদেশ নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আলোর দিশা। আসুন, হাদীসটির আলোচনার মাধ্যমে আমরা জীবনের সঠিক পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।